Feeds:
পোস্ট
মন্তব্য

Archive for the ‘অর্থহীন’ Category

আজকাল প্রায় সারাদিনই বাসায় বসে থাকি। পরীক্ষা ঈদের ছুটি আর নির্বাচনের পর কবে হবে তা এখনো অনিশ্চিত। অগ্যতা সারাদিন  গান শোনা, বই পড়া আর আড্ডা মারা। দেখতে দেখতে শীতকালও চলে আসলো। রাতের বেলায় যখন আড্ডা থেকে বাসায় ফিরি, ঠাণ্ডায় শরীরের অনাবৃত অংশে অদ্ভুত একটা শিরশিরে অনুভূতি হয়। এদিকে দিনের বেলাতেও আকাশের মুখ কয়দিন ভার হয়ে আছে। ছাই রঙের আকাশের যেদিকেই তাকাই, শুধুই নিঃশব্দ বিষণ্ণতা।

Winter Blues বলে একটা শব্দ শুধু এতদিন শুনেই এসেছি, কখনো বুঝতে পারি নি, আমি নিজেও শীতকাল আসলে কিছুটা বিষণ্ণ হয়ে পড়ি। চারিদিকের সবকিছু কেমন যেন চেপে বসতে যায় আমার উপরে।

এখন সময় কাটে পিঙ্ক ফ্লয়েড কিংবা পোয়েটস অভ দ্য ফল শুনে…

Read Full Post »

খুব ছোটবেলা থেকেই হারাই সবকিছু। ক্লাস সিক্সের বিজ্ঞান বই, কিংবা এক বৃষ্টির দিনে আমার প্রিয় হলুদ ছাতা। হারাতে হারাতেই বড় হয়ে উঠি।

এই বড় বেলাতেও হারাই অনেক কিছু। একদা প্রিয় এক বন্ধুর গলায় দিনরাত শুনতে শুনতে প্রিয় এক বাংলা গান হারিয়ে ফেলি অজ্ঞাতসারে।

হারায় আরো অনেক কিছু। হারায় লালবাগের কেল্লা, হারায় বহুদিন ধরে দেখতে চাওয়া জাপানি এক চলচ্চিত্র, হারায় বহুকাল পড়তে চাওয়া একটা অনূদিত বই। হারায় সময়, হারায় বিশ্বাস। হারায় দর্শন, হারায় ধানমন্ডির রেঁস্তোরা, হারায় বিখ্যাত শর্টফিল্ম কালেকশন, হারায় অনেক লেখার আইডিয়া, হারায় অনেক চিঠি।

অন্যকোন এক সময়ে ধৈর্য্য ধরে বসে থাকি, নিজেকেই হারিয়ে ফেলার জন্য।

##ঢাকা- রাত ২টা বেজে ৫৪ মিনিট।

চৌঠা অক্টোবর।

Read Full Post »

আজ বিকালে মিরপুর বাঁধের উপর গিয়েছিলাম। ঈদের দিন চারিদিকে মানুষের বন্যা। এর মধ্যে কপাল জোরে কীভাবে যেন একটা ফাঁকা জায়গা পেয়ে গিয়েছিলাম। সাঁতার পারি না চারজনের কেউই তবু নৌকায় সানন্দে উঠে পড়লাম চারজনই। প্রথমে ঠিক হয়েছিলো আধা ঘন্টা ঘুরবো আমরা। সে হিসাবে আমার দায়িত্ব ছিলো পনেরো মিনিট যাওয়ার পর মাঝিকে নৌকা ঘোরাতে বলা।

আমরা যাচ্ছিলাম; অনেক জল, অনেক কচুরিপানার মধ্যে দিয়ে। কিন্তু জলের নিঃস্তব্ধতাকে ভাঙ্গেনি কেউ; শুধু জলের মধ্যে বইঠার ছলাৎ ছলাৎ শব্দ। পনের মিনিট কেটে গেলো, আমরা নিশ্চুপ। আমাদের সামনেই জলের মধ্যে দাঁড়িয়ে আছে বিশাল আকৃতির কিছু বিদ্যুতের টাওয়ার, চার পা ছড়ানো। নৌকা ক্রমশ সেগুলির ভিতর দিয়ে যেতে থাকলো। অনেকটা সময় কেটে গেল বহু বছরের জমে থাকা সব চিন্তায়। আকাশে অনেক মেঘ, আসন্ন ঝড়ের প্রস্তুতিতে অস্বাভাবিক মৌন হয়ে আছে চারপাশ।

নৌকা চলে আসলো টাওয়ারের একদম নিচে। মাথা উঁচু করে দেখতে পেলাম একদম চূড়াটাকে। নৌকা আস্তে আস্তে এগিয়ে চলছে বিচ্ছিন্ন দ্বীপের মত কোন এক ভূখণ্ডের দিকে। যতই এগুচ্ছি, দ্রিম-দ্রিম ঢাকের শব্দের মিইয়ে যাওয়া স্বর কানে এসে লাগছে। শৈশব মনটা আবার চঞ্চল হয়ে উঠলো, “কীসের শব্দ ?” আবার কোথায় যেন হারিয়ে গেল শব্দটা !

বুঝতে পারছি চেতনার স্পষ্ট সীমারেখাগুলি কেউ যেন সযত্নে মুছে দিচ্ছে। লাল আর নীলের মাঝে কালোর সেই স্পষ্ট দাগটা যেন জলের স্রোতে ধুয়ে যাচ্ছে। মগজের মধ্যে সবকিছু মিলে মিশে একাকার। এখন আর মনে হচ্ছে না আমি মিরপুরে বাঁধের উপর, একটু দূরেই আশুলিয়া। স্মৃতির মধ্যে তালগোল পাঁকিয়ে আমি এখন পৌছে গেছি মহেশখালি। দূরের ওই গ্রাম এখন আর বিরুলিয়া না, বরং কুতুবদিয়া কি সোনাদিয়া।

দূরে সরে যাচ্ছে নৌকা, মুছে যাচ্ছে স্মৃতি। ক্রমশ স্মৃতিহীন এক মানুষ হয়ে যাচ্ছি আমি। চমৎকার !

Read Full Post »

০১

যাচ্ছে। চাই বা না চাই সময় ঠিকই কেটে যাচ্ছে। মহাবিশ্বের এনট্রপি বাড়ছে, বাড়ছে আমাদের বয়স আর কমছে পৃথিবীতে থাকার জায়গা।

প্রতিবছরই রমজানের সময়টাতে রীতিমত নরক যন্ত্রনা ভোগ করতে হয় দুপুর কিংবা বিকালে। তবু এবার যেন কেউ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, এই ভাগাড়ে আমরা কত বীভৎসভাবে বেঁচে আছি। পেটের দায়ে ছাত্র পড়াতে হয় মোহাম্মদপুরে। রোজকার ভরসা বারো নম্বর বাস ( অধুনা ছত্রিশ )। চেষ্টা করি আড়াইটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে। তিনটার ধারে কাছে বেজে গেলেই সেদিন হাড়ে হাড়ে টের পাই ঢাকা শহর কি বস্তু ! গতকালকের কথাই ধরা যাক।

বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যখন কাওরান বাজার সার্ক ফোয়ারার মোড়ে বাসের জন্য দাঁড়ানো, চারপাশে তখন জনসমুদ্র বললেও কম বলা হবে। দুই-তিনজন পুলিশ সার্জেন্ট আর ট্রাফিক পুলিশ সতর্কভাবে দাঁড়ানো, যাতে কোন বাসই এখানে না থামতে পারে, কোন লোকজন উঠা নামা না করতে পারে। কাজ অবশ্যই প্রশংসনীয় – যত্রতত্র বাস দাঁড়ানো যে যানজটের মূল কারণের একটি তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দাঁড়াবোই বা কোথায় ? বাংলামোটর বাস থামা নিষেধ, কাওরান বাজার বাস থামা নিষেধ। শাহবাগের পর একমাত্র ফার্মগেট। এই বিশাল রাস্তার মাঝে যারা আছেন তাঁরা কী করবেন তা কেউ জানে না।

অবশ্য পুলিশ সার্জেন্ট অতোটা নির্দয় নন। বাস থামতে দেন, তবে কাওরানবাজারের মোড় থেকে অনেকখানি সামনে। বাস থামতে না থামতেই, হাত দিয়ে ইশারা করেন বাস টান দিতে, কখনো বা লাঠি নিয়ে তাড়া করেন। এর ফলাফল কাল হাতেনাতেই দেখলাম। একলোক বাসে উঠতে যাচ্ছেন, এমন  সময় পুলিশ বাস ধাওয়া দেওয়া মাত্র বাস সজোরে টান মারলো। ভদ্রলোক নিশ্চিতভাবেই দুর্দান্ত রকমের পুণ্যবান, নচেৎ উনার হ্যাঁচরপ্যাঁচর করে বাসে উঠার বদলে সরাসরি উপরে পার্সেল হয়ে যাওয়ার কথা।

এর সমাধাম কী হবে তা ভেবে পাই না। ঢাকায় এত লোক, এরকম না করলে পুলিশের পক্ষে জ্যাম সামলানো মুশকিল – আবার আমার মত যারা ব্রাত্য, লোকাল পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করেন তাঁদের নাভিশ্বাস উঠে যায় এরকম দৌড়ের উপর রাখলে। জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা থেকে লাখ পঞ্চাশেক লোক ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না।

০২

আজকাল রাস্তাঘাটে কিংবা ব্লগে আলোচনার হট-টপিক আই সি এল আর ক্রিকেটাররা। সবাই ন্যায় অন্যায়, উচিত অনুচিত আর নিমক হালাল আর হারাম নিয়েই ব্যস্ত। সবাই বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েই খালাস। কিন্তু কেউ একটু তলিয়ে ভাবে না। যেই রাজ্জাককে নিয়ে আমরা খুশিতে বাক-বাকুম কারণ সে আই পি এলে খেলে, সেই আমরাই ত্যক্ত বিরক্ত হই কেন এতগুলি খেলোয়াড় বেইমানি করে আই সি এলে গেল। কেউ কি ভেবে দেখেছেন আই পি এল আর আই সি এল এর তফাৎটা কী ? কোন তফাৎ নেই; শুধু আইপিএল ভারতীয় বোর্ডের তাই আইসিসি অনুমোদন দিয়েছে আর আইসিএল এর কপাল মন্দ তাই পায় নি।

অনেকের দেশপ্রেম যেই বর্গের সমানুপাতিক হারে উত্থিত হচ্ছে, ভয় হয়, কোনদিন না এইসব খেলোয়াড়দের মৃত্যুদন্ড দাবি করে বসে। কয়জন মানুষ ট্যাক্স দেয়, কয়জন মানুষ ঘুষ খায় না নিদেন পক্ষে কয়জন মানুষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে না ? শুধু ভাবতে হবে ক্রিকেটারদেরই।

কেউ কি একবার ভেবেছেন ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচকদের কি অবস্থা ? এত টাকার স্রোতের ভেতর তাঁরা কতটা ঠিক আছেন? কেন একজন সামরিক ব্যক্তি ক্রীড়া সংস্থা তথা ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আছেন ? কেউ কি আছেন ? কেউ কি একটু বলবেন ?

Read Full Post »

এক রোববার দুপুরে রোদে পুড়তে পুড়তে বাসায় আসি। সেই রোববার রাতেই আকাশ ভেঙ্গে নামে বৃষ্টি। সাথে কিছুটা বিদ্যুত চমকায়, দুয়েকটা বাজ ও বুঝি পড়ে।

কেউ কেউ ভালোবেসে ফেলে প্রায় একযুগ আগে আর বর্তমানের জন্য রাখে শুধুই হাহাকার। তবু টিকে থাকা যায় কারণ মানুষ পৃথিবীতে এসেছে টিকে থাকার জন্যই। স্মৃতি থাকে না কিছুই , শুধু মাঝে মাঝে মোবাইলের রিংটোনটা হয়তো একটু জ্বালায়। তবু সেটা মেনে নেওয়া যায় কারণ মোবাইলের বহু আগেই আবিষ্কৃত হয়েছিলো প্রেম।

মানুষ ভুলে থাকতে চায়, কিন্তু হয়তো ভুলে থাকতে চায় না তার শরীর। বহু আগে ভুল করে সন্ধ্যা হই হই কোন এক বিকেলে যখন তারা জড়িয়ে ধরে ভীতভাবে প্রথম চুমু খেয়েছিলো, তার স্মৃতি কোথায় যেন একটা দগদগে ঘা রেখে যায়। কিন্তু আশ্চর্য, তবু মানুষ পারে। মানুষের মরে যেতে ইচ্ছে করে কিংবা আফসোস জাগে কেন জন্ম হলো, তবু মানুষ বেঁচে থাকে।

কাচের জানালায় একসময় সেই রোববারের বৃষ্টির ছাট এসে লাগে, ঝাপসা হয়ে যায় সামনের ভবিষ্যত। ছবির মত পরিষ্কার হয়ে উঠে একযুগ আগের সেই ভালোবাসার অতীত, যাদেরকে আমরা বাঁচিয়ে রাখি সযত্নে।

Read Full Post »

মেলানকোলিঃ শিল্পী স্টেলা হোয়াইটের আঁকা

মেলানকোলিঃ শিল্পী স্টেলা হোয়াইটের আঁকা

মানুষের মন সত্যিই বিচিত্র। কখন কী কারণে যে মন ভালো কিংবা খারাপ হতে পারে সেটাও সমান বৈচিত্র্যের। গত দু-তিন দিনে ঘটে যাওয়া ঘটনাতে আমার মন ভালো থাকা উচিত না এবং আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত সেটা ছিলোও না। কিন্তু সন্ধ্যার দিকে স্প্রেড স্পেক্ট্রামের উপর গতসপ্তাহে ল্যাবে করা আসা এক্সপেরিমেন্টের রিপোর্ট লেখতে যেয়ে একটা ব্যাপার খুব সহজেই ধরে ফেলার পর, মনে খুব ফূর্তি হল। বেশ ছোট একটা ব্যাপার, এজন্য মিনিট পাঁচেকের জন্য মন ভালো হতে পারে কিন্তু ফূর্তি ফূর্তি বোধ হওয়ার কথা না। তবু বেশ আনন্দ পাচ্ছি। যে রিপোর্টটা নিশ্চিন্তে ল্যাব পার্টনারের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারতাম, সেটা নিজেই বসে বসে লিখছি।

কেন এরকম করছি ? একটু আগে বেশ কিছুক্ষণ চিন্তা করে বুঝলাম, আমি আসলে পালাতে চাইছি। নিজের থেকে নিজেই পালাতে চাইছি। যে চিন্তাগুলি করতে ভালো লাগে না সেগুলি থেকে পালাতে চাইছি ; আর তাই আনন্দ খুঁজে পাচ্ছি কমিউনিকেশন থিয়োরির কোন সমস্যার সামান্য কোডিং এ। যাক, আনন্দ যখন পাচ্ছি সেটাই সই। নিজেকে নিরানন্দে রাখতে এই মূহুর্তে আর ইচ্ছা করছে না।

## একটা গল্প লেখার ইচ্ছা মাথায় খুব ঘুরঘুর করছে গতকয়েকটা দিন ধরে। আগামীকাল কোন কাজ না থাকলে, একটা প্লট ভাবতে হবে।

Read Full Post »

গতবছর এমন সময়ের টাইফয়েডটা আমাকে বেশ ভীতু বানিয়ে ফেলেছে। এরপর যে কারো দু-চারদিনের বেশি জ্বরের কথা শুনলে দুশ্চিন্তায় পড়ি, টাইফয়েড না তো ? অবশ্য গত এক বছরে আমার আর জ্বর হয়নি, তাই নিজেকে নিয়ে শান্তিতেই ছিলাম। কিন্তু বছর না ঘুরতেই আরেক অগাস্টে জ্বরে পড়লাম। এবারের জ্বর অবশ্য তেমন বেশি না। ১০০ ডিগ্রী ফারেনহাইটের মত উঠে, প্যারাসিটামল খেলেই নেমে যাচ্ছে। কিন্তু এবারও জ্বরের আয়ু প্রায় চার-পাঁচ দিন হতে চললো। বাইরে কিছু না বললেও, অস্বস্তিটা মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে। অবশ্য জ্বরের কারণ দীর্ঘ তিন বছর পর ভেজা মাঠে প্রখর রোদে ফুটবল খেলার কারণে কি না, সেটাও নিশ্চিত না।

জ্বর নিয়েই আজকের পরীক্ষাটা দিলাম। আগামীকালও একটা পরীক্ষা আছে – সত্যবাবুর টেলিকমুনিকেশন। বিষয়টা আমাকে একদমই টানছে না, মনে হচ্ছে এর চেয়ে মোবাইল সেলুলার কমুনিকেশন সাবজেক্টটা ভালো ছিলো। অবশ্য মেজর মাইনরের প্যাঁচে আমরা সবাই কম বেশি জেরবার – এছাড়া আমার আর কোন উপায় ছিলো না ! বন্ধু শান্ত তাঁর ইচ্ছার বিপরীতে বাধ্য হয়েই দুটো ইলেক্ট্রনিকসের সাবজেক্ট নিয়েছে – ওর মাইনরের কোটা থেকে। মনে হচ্ছে এই মেজর মাইনর নিয়ে ডিপার্টমেন্টের আরো একটু চিন্তা ভাবনা করা দরকার।

নতুন এই জ্বরে আর কিছু না হোক, আমার চিন্তা ভাবনায় যে পরিবর্তন এসেছে, তাতে নিশ্চিত। না হলে নিজের দিনপঞ্জি লেখার কোন পরিকল্পনা অন্তত আমার ছিলো না !

ছবিঃ পাবলো পিকাসোর আঁকা First Steps।

Read Full Post »