০১
যাচ্ছে। চাই বা না চাই সময় ঠিকই কেটে যাচ্ছে। মহাবিশ্বের এনট্রপি বাড়ছে, বাড়ছে আমাদের বয়স আর কমছে পৃথিবীতে থাকার জায়গা।
প্রতিবছরই রমজানের সময়টাতে রীতিমত নরক যন্ত্রনা ভোগ করতে হয় দুপুর কিংবা বিকালে। তবু এবার যেন কেউ চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, এই ভাগাড়ে আমরা কত বীভৎসভাবে বেঁচে আছি। পেটের দায়ে ছাত্র পড়াতে হয় মোহাম্মদপুরে। রোজকার ভরসা বারো নম্বর বাস ( অধুনা ছত্রিশ )। চেষ্টা করি আড়াইটার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে যেতে। তিনটার ধারে কাছে বেজে গেলেই সেদিন হাড়ে হাড়ে টের পাই ঢাকা শহর কি বস্তু ! গতকালকের কথাই ধরা যাক।
বেলা সাড়ে তিনটার দিকে যখন কাওরান বাজার সার্ক ফোয়ারার মোড়ে বাসের জন্য দাঁড়ানো, চারপাশে তখন জনসমুদ্র বললেও কম বলা হবে। দুই-তিনজন পুলিশ সার্জেন্ট আর ট্রাফিক পুলিশ সতর্কভাবে দাঁড়ানো, যাতে কোন বাসই এখানে না থামতে পারে, কোন লোকজন উঠা নামা না করতে পারে। কাজ অবশ্যই প্রশংসনীয় – যত্রতত্র বাস দাঁড়ানো যে যানজটের মূল কারণের একটি তা আমরা সবাই জানি। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে দাঁড়াবোই বা কোথায় ? বাংলামোটর বাস থামা নিষেধ, কাওরান বাজার বাস থামা নিষেধ। শাহবাগের পর একমাত্র ফার্মগেট। এই বিশাল রাস্তার মাঝে যারা আছেন তাঁরা কী করবেন তা কেউ জানে না।
অবশ্য পুলিশ সার্জেন্ট অতোটা নির্দয় নন। বাস থামতে দেন, তবে কাওরানবাজারের মোড় থেকে অনেকখানি সামনে। বাস থামতে না থামতেই, হাত দিয়ে ইশারা করেন বাস টান দিতে, কখনো বা লাঠি নিয়ে তাড়া করেন। এর ফলাফল কাল হাতেনাতেই দেখলাম। একলোক বাসে উঠতে যাচ্ছেন, এমন সময় পুলিশ বাস ধাওয়া দেওয়া মাত্র বাস সজোরে টান মারলো। ভদ্রলোক নিশ্চিতভাবেই দুর্দান্ত রকমের পুণ্যবান, নচেৎ উনার হ্যাঁচরপ্যাঁচর করে বাসে উঠার বদলে সরাসরি উপরে পার্সেল হয়ে যাওয়ার কথা।
এর সমাধাম কী হবে তা ভেবে পাই না। ঢাকায় এত লোক, এরকম না করলে পুলিশের পক্ষে জ্যাম সামলানো মুশকিল – আবার আমার মত যারা ব্রাত্য, লোকাল পাবলিক ট্রান্সপোর্ট ব্যবহার করেন তাঁদের নাভিশ্বাস উঠে যায় এরকম দৌড়ের উপর রাখলে। জরুরী ভিত্তিতে ঢাকা থেকে লাখ পঞ্চাশেক লোক ঘাড় ধরে বের করে দেওয়া ছাড়া উপায় দেখছি না।
০২
আজকাল রাস্তাঘাটে কিংবা ব্লগে আলোচনার হট-টপিক আই সি এল আর ক্রিকেটাররা। সবাই ন্যায় অন্যায়, উচিত অনুচিত আর নিমক হালাল আর হারাম নিয়েই ব্যস্ত। সবাই বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েই খালাস। কিন্তু কেউ একটু তলিয়ে ভাবে না। যেই রাজ্জাককে নিয়ে আমরা খুশিতে বাক-বাকুম কারণ সে আই পি এলে খেলে, সেই আমরাই ত্যক্ত বিরক্ত হই কেন এতগুলি খেলোয়াড় বেইমানি করে আই সি এলে গেল। কেউ কি ভেবে দেখেছেন আই পি এল আর আই সি এল এর তফাৎটা কী ? কোন তফাৎ নেই; শুধু আইপিএল ভারতীয় বোর্ডের তাই আইসিসি অনুমোদন দিয়েছে আর আইসিএল এর কপাল মন্দ তাই পায় নি।
অনেকের দেশপ্রেম যেই বর্গের সমানুপাতিক হারে উত্থিত হচ্ছে, ভয় হয়, কোনদিন না এইসব খেলোয়াড়দের মৃত্যুদন্ড দাবি করে বসে। কয়জন মানুষ ট্যাক্স দেয়, কয়জন মানুষ ঘুষ খায় না নিদেন পক্ষে কয়জন মানুষ ক্ষমতার অপব্যবহার করে না ? শুধু ভাবতে হবে ক্রিকেটারদেরই।
কেউ কি একবার ভেবেছেন ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচকদের কি অবস্থা ? এত টাকার স্রোতের ভেতর তাঁরা কতটা ঠিক আছেন? কেন একজন সামরিক ব্যক্তি ক্রীড়া সংস্থা তথা ক্রিকেট বোর্ডের সাথে আছেন ? কেউ কি আছেন ? কেউ কি একটু বলবেন ?
মন্তব্য করুন